প্রিয় পাঠকবৃন্দ বাংলা ইমেজ এর পক্ষ থেকে সবাইকে জানাই আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। আমার দ্বীনী ভাই ও বোনেরা আশা করি সবাই ভালো আছেন। আমরাও আপনাদের দোয়া ও আল্লাহর রহমতে ভালো আছি। প্রিয় ভাই ও বোনেরা আজ আমরা আপনাদের মাঝে নিয়ে আসলাম সূরা ইনশিরাহ, সূরা আল ইনশিরাহ বাংলা অনুবাদ, আল ইনশিরাহ, সূরা ইনশিরাহ বাংলা উচ্চারণ, সূরা ইনশিরাহ এর ফজিলত, ইনশিরাহ সূরা। আশা করি সম্পূর্ণ পোস্টটি ধৈর্য সহকারে পড়বেন।
সূরা ইনশিরাহ | সূরা আল ইনশিরাহ বাংলা অনুবাদ
بِسمِ اللَّهِ الرَّحمٰنِ الرَّحيمِ
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
শুরু করছি আল্লাহর নামে যিনি পরম করুণাময়, অতি দয়ালু
[1] أَلَم نَشرَح لَكَ صَدرَكَ
[1] আলাম্ নাশ্রাহ্ লাকা ছোয়াদ্রাকা।
[1] আমি কি আপনার বক্ষ উম্মুক্ত করে দেইনি?
[2] وَوَضَعنا عَنكَ وِزرَكَ
[2] অওয়াদ্বোয়া’না- ‘আন্কা ওয়িয্রাকা।
[2] আমি লাঘব করেছি আপনার বোঝা,
[3] الَّذى أَنقَضَ ظَهرَكَ
[3] আল্লাযী য় আন্ক্বাদ্বোয়া জোয়াহ্রকা।
[3] যা ছিল আপনার জন্যে অতিশয় দুঃসহ।
[4] وَرَفَعنا لَكَ ذِكرَكَ
[4] অরাফা’না-লাকা যিক্রক্।
[4] আমি আপনার আলোচনাকে সমুচ্চ করেছি।
[5] فَإِنَّ مَعَ العُسرِ يُسرًا
[5] ফাইন্না মা‘আল্ উ’স্রি ইয়ুস্রান্।
[5] নিশ্চয় কষ্টের সাথে স্বস্তি রয়েছে।
[6] إِنَّ مَعَ العُسرِ يُسرًا
[6] ইন্না মা‘আল্ উ’স্রি ইয়ুস্র-।
[6] নিশ্চয় কষ্টের সাথে স্বস্তি রয়েছে।
[7] فَإِذا فَرَغتَ فَانصَب
[7] ফাইযা-ফারাগ্তা ফান্ছোয়াব্।
[7] অতএব, যখন অবসর পান পরিশ্রম করুন।
[8] وَإِلىٰ رَبِّكَ فَارغَب
[8] অইলা-রব্বিকা র্ফাগব্।
[8] এবং আপনার পালনকর্তার প্রতি মনোনিবেশ করুন।
সূরা ইনশিরাহ বাংলা উচ্চারণ
সূরা ইনশিরাহ এর ফজিলত
সূরা ইনশিরাহ পবিত্র কুরআনের ৯৪ তম সূরা। এর আয়াত সংখ্যা ৮, এটি মক্কায় অবতীর্ন তাই ইনশিরাহ মক্কি সূরা।
> সূরা ইনশিরাহ’র মূল তিনটি বিষয় হল মহানবী [সা:] এর প্রতি মহান আল্লাহর নানা অনুগ্রহ, ভবিষ্যতে তাঁর দাওয়াতি তৎপরতার সমস্যাগুলোর সমাধানের সুসংবাদ বা ইঙ্গিত এবং এক আল্লাহর প্রতি মনোনিবেশ বা গভীর প্রেমসহ তাঁর ইবাদত ও তাঁর দরবারে দোয়া আর কাকতি-মিনতিতে মশগুল হওয়া। মহানবীর [স :] নবুওতি তৎপরতা আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হলে এ তৎপরতার প্রথম বছরেই নাজিল হয়েছিল সূরা ইনশিরাহ।
> সূরা ইনশিরাহ’য় প্রথমত আল্লাহ রাসূল [সা:] এর বক্ষ জ্ঞানে পরিপূর্ণ হওয়ার কথা উল্লেখ করেছেন। তা সত্ত্বেও কোনো কোনো তাফসীরকার বলেন যে, ফেরেশতা মহানবী [সা.]-এর বক্ষ বিদারণ করেছেন এবং তাঁর হৃদয় ধৌত করেছেন। এটা বুদ্ধি-বিবেকের সম্পূর্ণ বিপরীত ও অযৌক্তিক কথা। কারণ বুক ধুয়ে কখনও আত্মিক পরিশুদ্ধতা অর্জিত হয় না।
> দ্বিতীয়ত আল্লাহ তাঁর প্রতি এই অনুগ্রহ করেছেন যে, পবিত্র কুরআন ব্যাখ্যা ও ঐশী বিধিবিধান পৌঁছানো এবং তা বাস্তবায়িত করার যে গুরুদায়িত্ব তাঁর কাঁধে ছিল তা হযরত আলীর [আ.]-এর খেলাফত ও প্রতিনিধিত্বের মাধ্যমে লাঘব করে দিয়েছেন। আর যেহেতু এ আদেশ অর্থাৎ আলী [আ.]-এর খেলাফতের ঘোষণাকে তিনি খুব কঠিন কর্ম গণ্য করেছিলেন সে কারণে আল্লাহ যেরূপে অন্য স্থানে অন্য বাক্যে বিষয়টির প্রতি ইঙ্গিত করেছেন অনুরূপ এ স্থলেও এভাবে বলেছেন যে, যখন অবসর পাও অর্থাৎ যখন তুমি বিদায় হজ পালন করে নবুওয়াতের দায়িত্ব সম্পন্ন করে নেবে তখন আলীকে খলিফা নিযুক্ত করার কঠোর প্রচেষ্টায় রত হও। অতঃপর আল্লাহর দিকে মনোনিবেশ করবে। অর্থাৎ মৃত্যুর প্রস্ততি নেবে। অবশ্য সুন্নী মুফাসসিররা এরূপ ব্যাখ্যা করেননি।
> মহানবী [সা:] যখন একত্ববাদের প্রচার শুরু করেন তখন কাফের ও মুশরিকদের ব্যাপক বিরোধিতা আর বাধার মুখোমুখি হন। তাই রেসালতের দায়িত্ব পালন তাঁর কাছে খুব কঠিন মনে হচ্ছিল প্রথমদিকে। অবশ্য প্রত্যেক নবী-রাসুলের জন্যই প্রথম দিকে কঠিন পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছিল; মহান আল্লাহর সহায়তায় তারা সব সংকট ও বাধা কাটিয়ে বিজয়ী হয়েছিলেন। তবে মহানবীর [সা:] জন্য পরিবেশ-পরিস্থিতি ছিল অনেক বেশি কঠিন ও প্রতিকূল। আর এ জন্যই মহান আল্লাহ সূরা ইনশিরাহ’তে উদ্বিগ্ন ও চিন্তিত মহানবী [সা:] কে বলছেন, আল্লাহর ধর্ম প্রচারের জন্য কষ্ট ও ত্যাগ স্বীকার কখনও বিফলে যায় না। প্রতিটি সংকট ও কষ্টের মধ্যেই লুকিয়ে আছে মুক্তির পথ। পবিত্র লক্ষ্য অর্জনের জন্য কষ্ট করা ও ত্যাগ স্বীকার এবং নানা বাধার মোকাবিলা করা ক্রম-বিকাশ ও উন্নতির নতুন নতুন পথ খুলে দেয়। তাই সংকট বা সমস্যাকে ভয় না করে সানন্দে বরণ করা উচিত। মহানবী [সা:] যেমন অবর্ণনীয় নানা কষ্টের শিকার হয়েছেন তেমনি আল্লাহর অনেক বিশেষ অনুগ্রহও পেয়েছেন। আর এ জন্যই সূরা ইনশিরাহতে মহান আল্লাহ বলেছেন: নিশ্চয়ই কষ্টের সাথে স্বস্তি আছে।
> সূরা ইনশিরাহ'র চার নম্বর আয়াতে মহান আল্লাহ তাঁর সর্বশেষ রাসুল সম্পর্কে বলছেন, আমরা তোমার স্মরণকে উন্নীত করেছি। - আজ বিশ্বব্যাপী যত খানে যতবার নামাজের পবিত্র আজান দেয়া হয় ততবারই বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মাদ [সা:]'র নাম শ্রদ্ধাভরে উচ্চারণ করা হয়। মহান আল্লাহর নামের পরই মহানবীর [সা:] নাম উচ্চারণ করা হয়।
> সূরা ইনশিরাহ’র শেষ আয়াতে বলা হয়েছে, হে নবী! যখনই কোনো গুরুত্বপূর্ণ কাজ শেষ করে অবসর পাবে তখন আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ শুরু করবে। সব সময়ই সাধনায় ব্যস্ত থাকবে এবং সর্ব অবস্থায় আল্লাহর প্রতি মনোযোগী থাকবে তথা আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনে সচেষ্ট থাকবে ও তাঁর নৈকট্য অর্জনের দিকে দ্রুত এগিয়ে যাবে।
Tag: সূরা ইনশিরাহ, সূরা আল ইনশিরাহ বাংলা অনুবাদ, আল ইনশিরাহ, সূরা ইনশিরাহ বাংলা উচ্চারণ, সূরা ইনশিরাহ এর ফজিলত, ইনশিরাহ সূরা।